বিশ্ব বৈষ্ণব রাজসভার কৃতগ্নতা বোধ
শ্রীল অভয় চরনারবিন্দ ভক্তি বেদান্ত স্বামী মহারাজের শিষ্য
শ্রীপাদ গুরুদেব অতুলানন্দ আচার্য্য প্রভু
আমাদের সম্প্রদায়ের মহত্ব:- প্রিয় বৈষ্ণবগণ ও বিশ্ব বৈষ্ণব রাজসভার সদস্যগণ| আপনাদের শ্রীচরণে আমার দন্ডবত প্রনাম| আমি আপনাদের সকলকে আমার আন্তরিক কৃতজ্নতা জানাই| সন ১৯৭২ সালে যখন আমি আমার গুরুদেব শ্রীল অভয় চরনারবিন্দ ভক্তি বেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের নিকট দীক্ষা গ্রহণ করি তখন আমার এই স্বতন্ত্র অনুভব ছিল যে, আমি বিশ্বের প্রাচীনতম ঐতিহ্যময় ঈশ্বরবাদের মধ্যে প্রবেশ করিতেছি| সেই জন্য আমি নিজেকে ভক্তি পরিবারস্থ অনুভব করিয়াছিলাম| সেই সময় আমি নিজ গুরুদেব ব্যাতীত অন্য কাহাকেও জানিতাম না| পরে যখন ইহা লক্ষ্য করিলাম যে, নব নব ভক্তকান্খি দিগের মধ্যে বেশ কিছু কিছু সাম্প্রদায়িকতা দোষ প্রবেশ করিয়া একে অন্যের প্রচার প্রয়াস কে উত্তম মর্য্যদা দিচ্ছেন না, তখন এটা আমার খুব বিচিত্র বোধ হইত| আমি ইহা শিক্ষা করিয়াছিলাম যে কনিষ্ঠ ভক্তগণ হিংসা ও লোভের দ্বারা কখনো প্রভাবিত হইবার যোগ্য| এমনকি তাহারা স্ব সংঘকে পর্য্যন্ত নষ্ট করে| আমার গুরুদেব একবার বলিয়াছিলেন বহিজগতের কোন ব্যক্তি আমাদের ক্ষতি করিতে পারিবে না| কিন্তূ আমরা স্বয়ং সংঘস্থিত ব্যক্তিগন স্ব-কার্যে যত্নশীল না হই তাহলে নিজ নিজ ধংস হইবে|
পরিশেষে আমি আমার গুরুদেবের এবং পরম্পরায় মহত্বের বিষয়ে চিন্তা করিয়াছিলাম| যদিও এই মহানতা নিশ্চিতভাবে নিজ ঐতিহ্যই নস্ত্য| সেই দিব্য শ্রীচৈতন্য বৃক্ষের বহু সুন্দর শাখা প্রশাখায় অসংখ্য বৈষ্ণব পরবার রহিয়াছেন| তাহাদের সকলের প্রচার প্রচেষ্ঠা সাধারণের চক্ষে কখনো বৈসাদৃশ্যমুক্ত মনে হইলেও আসলে টা বৈচিত্রের পরিচায়ক পরস্পরের প্রচার বৈশিষ্টকে উত্সাহিত করা ইহাতে নিজের এবং অনুগত জনকে অমৃতময় বিচার এবং সঙ্গ গ্রহণে হতাশা না করে উত্সাহ সঞ্চার করে থাকি|
শ্রীল ভাক্তিপ্রমোদ পুরী গোস্বামী মহারাজের বৈষ্ণবগুনাবলীর একটি দিক:- এতএব ১৮ই নভেম্বর ১৯৯৪ সালে বিশ্ব বৈষ্ণব রাজসভার ভিত্তি স্থাপন এক প্রয়োজনীয় শান্তি| আমি অনুভব করি যে শ্রীল জীব গোস্বামী আমাদের সকলকে তাঁহার আশির্বাদ প্রেরণ করিতেছেন এবং শ্রীল ভক্তি সিদ্বান্ত সরস্বতী ঠাকুর সমস্ত পূর্ব আচার্য্যগণ শ্রীল ভাক্তিপ্রমোদ পুরী গোস্বামী মহারাজের ন্যায় বিনয়ী শিক্ষিত সাধুর মাধ্যমে অত্র-বর্তমানে আছেন এটি এক আনন্দময় পদক্ষেপ| বৈষ্ণবগণ ভবিষ্যতে ইহা হইতে প্রচুর সহায়তা প্রাপ্ত হইবেন| এটাই ভক্তি বিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য যে স্ব , স্ব গুরু প্রেরিত বিদ্যার্থীগণকে শ্রীল জীব গোস্বামী শিক্ষা দিবেন| শ্রী বৃন্দাবনের ভাবও এখানে বর্তমান, কারণ বহু সংখ্যক গুরুবর্গ একত্রিত হইয়া পরমেশ্বর ভগবানের মহিমা কীর্তন করেন| সরলভাবে একে অন্যের কার্য্যকে উচ্চ মর্যদা প্রদান করিতেছেন ইহা বিশ্ব বৈষ্ণব রাজসভার রুপানুগজনের অনুসরণ করিয়া তদনুরূপ দ্যা বিশ্ববাসীকে প্রদর্শন করেন এবং শ্রীমায়াপুর নামক পবিত্র ধামে আবির্ভূত পরম করুনাময় প্রভু দ্বারা এই ভুলোকে আনীত সর্বোচ্চ মূল্যবান সম্পত্তি সমস্ত জীবগণকে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে প্রদান করেন| তাঁহার প্রেম বাণীতে সাম্প্রদায়িকাতার কোন স্থান নাই| বিশ্ব বৈষ্ণব রাজসভার সাক্ষ্যাতকারে যখন আমি দিব্য গুরুবর্গের মূর্তি সকল দেখিয়া ছিলাম এবং সমবেত বৈষ্ণব গণের মধুর কীর্তন শ্রবণ করিয়াছিলাম তখন মাই কৃতজ্গ্নতা বোধ করিয়াছি, কারণ তিনি আমাকে এমনই সুন্দর পরিবারের মধ্যে আনিয়াছেন আমি তাঁহার উপস্থিতি অনুভব করিয়াছিলাম এবং আশা করি যেন বিশ্বের সমস্থ বৈষ্ণব তাঁহাদের ভুল ত্রুটি ও ভেদভাব বর্জন পূর্বক সেখানে উপস্থিত হউন|
বিশ্ব বৈষ্ণব রাজসভার প্রতিবেদনের যোগ সম্পর্কের যে সাধারণ মঞ্চ তৈয়ার হইবে তাহাই প্রকৃত পক্ষে আমাদের এক নতুন সহযোগিতার বৈষ্ণব জগতে লইয়া যাইবে| আমি সতস্ফুর্ত ভাবে এই সংস্থায় যোগদান করিয়াছি| সকল বৈষ্ণবগণকে এই অনুপম সুযোগ গ্রহনের জন্য আমাদের একত্রিত হইতে আবেদন জানাই| যখন বিশ্ব জানতে পারবে এক অনুপম আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য চির সত্য বিভেদের মাঝে ঐবাত ঐক্যকে প্রকৃত ভাবে প্রতিষ্ঠা করেছে তখন বৈষ্ণব সিদ্বান্তের মর্য্যাদা আরো বেশি জনপ্রিয় হবে| সেই পুরাতন পরমাগত কঠোর নীতি সমূহ সঙ্গে প্রেমের মুক্ত প্রবাহ এবং বিভিন্ন মিলনের যোগদানের ফলে আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের শুদ্ধতা এবং লাবন্য ভাগাভাগী করে নিতে পারিব|
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন